৫ বছরের শিশু তুহিনকে নির্মমভাবে গাছে ঝুলিয়ে হত্যা

প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: পাঁচ বছরের শিশু তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে তার পেটে দুইটি ছুরি ঢুকিয়ে রেখে কান ও লিঙ্গ কেটে নিয়ে গেছে ।  এ  ঘটনায় সোস্যাল মিডিয়ায় সাড়া দেশে নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে । পুলিশ নিহতের পিতাসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নিয়েছে ।

 

সোমবার (১৪অক্টোবর) বিকেলে নিহত তুহিন মিয়ার পিতা আব্দুল বাসির, চাচা আব্দুল মসব্বির, নাসির উদ্দিন, খায়রুল নেছা, চাচাতো বোন তানিয়া ও প্রতিবেশী আজিজুল ইসলামকে থানা হেফাজতে নিয়ে যায় পুলিশ।

 

সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কেজাউড়া গ্রামে রাতের আঁধারে ঘর থেকে তুলে নিয়ে শিশু তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। রোববার ভোর রাতে এ ঘটনা ঘটে।

 

আব্দুল বাসিতের ছেলে তুহিন মিয়া স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র।

 

নিহতের স্বজন ও পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন আবদুল মুসাব্বিরের পরিবারের লোকজন। রাত ৩টার দিকে তুহিনের চাচাতো বোন সাবিনা বেগম ঘরের দরজা খোলা দেখে চিৎকার শুরু করে।

 

চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্যরা ঘুম থেকে উঠে দেখেন তুহিন ঘরে নেই। খোঁজাখুঁজি করে বাড়ি থেকে কিছু দূরে মসজিদের পাশে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। এ সময় লাশের পেটে দুটি ছুরি ঢোকানো ছিল।

 

নিহতের আত্মীয় ইমরান হোসেন জানান, খুনিরা শিশুটির কান ও লিঙ্গ কেটে নিয়েছে। হত্যার পর তাকে গাছে ঝুলিয়ে দেয় এবং পেটে দুটি ছুরি ঢুকিয়ে দেয়।

 

দিরাই থানার এসআই আবু তাহের মোল্লা খবর পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

 

স্থানীয় লোকজন জানান, নিহত তুহিন মিয়ার পিতা আব্দুল বাসির ও তার ভাইদের সঙ্গে গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনের দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছে। আব্দুল বাসিরের ভাগনি নিলুফা বেগম হত্যা মামলায় আনোয়ার হোসেন জেলও খাটেন। এছাড়া তুহিন মিয়ার শরীরে গাঁথা ছুরি দুটিতে সালমান ও সালাতুল লেখা খোদাই করা ছিল। সালামন ও সালাতুল নামে আনোয়ার হোসেনের দুজন নিকট আত্মীয় রয়েছে।

 

নিহতের বাবা আব্দুল বাসির বলেন, আমি রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম, ভাতিজির ডাক শুনে উঠে দেখি ছেলে আমার পাশে নেই, দরজা খোলা। মসজিদের সামনে গিয়ে দেখি আমার ছেলেকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে। কিভাবে কি হল বুঝতেই পারছি না।

 

নিহতের মামা মো. নুরুজ্জামাল বলেন, গ্রামের আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে আমাদের বিরোধ ছিল, তবে কারা তাকে হত্যা করেছে বলতে পারছি না। যেই জড়িত থাকুক আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

 

স্থানীয় রাজানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৌম চৌধুরী বলেন, গ্রামে বিরোধ থাকতেই পারে, বিরোধের কারণে এ রকম হত্যাকাণ্ড কাম্য নয়। যেই জড়িত থাকুক আইনের আওতায় এনে আমরা তার কঠোর শাস্তি চাই।

 

 

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com