না’গঞ্জে কঠোর নিরাপত্তায় শেষ হলো প্রতিমা বিসর্জন

প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: নারায়ণগঞ্জে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। ঝাকজমকপূর্ণ পরিবেশে প্রতীমা বিসর্জনে পর্ব শেষ করল হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন । এসপি হারুনের নির্দেশনায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে শেষ হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিমা বিসর্জন ।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) রাতে নারায়ণগঞ্জে কঠোর নিরাপত্তায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব।
নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও দুর থেকে আসা অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের আত্মীয়ের বাড়িতে এসে প্রতিমা বিসর্জনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেছে । হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছে উৎসবের আমেজই ছিল চোখে পড়ার মত । নগরীতে সবজায়গার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতির কোন কমতি ছিলনা যার ফলে কোন রকম অপ্রিতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ হলো প্রতিমা বিসর্জন ।
অন্য জেলা থেকে আসা এক দম্পতি বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জে প্রায় প্রতিবছর মা দূর্গা দেবীর প্রতিমা বিসর্জন দেখতে আসি । সবাই মিলেমিশে আমরা এখানকার আয়োজন খুব উপভোগ করি তাই ছুটে আসি ।
মন্দির ও শোভাযাত্রার পথে বিপুল সংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছিল র্যাব আনসার সদস্যদেরও । সন্ধ্যার পর থেকেই শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সড়ক জুড়ে নামে মানুষেল ঢল । মানুষে মানুষে লোকারণ্য চারদিক এ যেন মানুষের মিলন মেলা ।
মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে ছিল মণ্ডপে মণ্ডপে দশমীর বিহিত পূজা অতঃপর দেবী বিসর্জন আর শান্তিজল গ্রহণ। হিন্দু বিশ্বাসে টানা পাঁচদিন মৃন্ময়ীরূপে দেবী দুর্গা মণ্ডপে মণ্ডপে থেকে ফিরে গেছেন কৈলাসে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে। সকালে বিহিত পূজার পর ভক্তের কায়মনো প্রার্থনা আর ঢাক-ঊলুধ্বনি-শঙ্খ নিনাদে হিন্দু রমণীদের পরম আকাঙ্খিত সিঁদুর খেলায় মুখর হয়ে ওঠে মন্দিরগুলো। একদিকে বিদায়ের সুর। অন্যদিকে উৎসবের আমেজ।
সন্ধ্যার পর থেকেই বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপ থেকে ভক্তরা ট্রাক ও ঠেলাগাড়িতে প্রতিমা নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেন শহরের ৩নং মাছ ঘাট এলাকাতে। ট্রাকে প্রতিমা নিয়ে ভক্তরা ঢাক-ঢোল, করতাল ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রসহ শোভাযাত্রায় যোগ দেয়। শোভাযাত্রার পূর্বে নারীরা দেবীর ললাটের সিঁদুর আপন ললাটে এঁকে নেন। নগরীর রাস্তার দু’পাশে দাঁড়ানো হিন্দু নারীদের উলু ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে চারদিক। এ সময় শহরে এক উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
প্রতিমা ঘাটে নিয়ে আসার পর ভক্তকুল শেষবারের মতো ধুপধুনো নিয়ে আরতিতে মেতে ওঠেন। শেষে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্যদিয়ে দেবীকে নৌকায় তুলে বিসর্জন দেওয়া হয়। নদীপাড়ে ধর্মীয় রীতি মেনে অপরাজিতা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। শেষে প্রতিমা জলে ফেলে গ্রহণ করা হয় শান্তিজল। অনেকে ঘরে আনেন সেই শান্তি জল।