পরীক্ষিত বন্ধু ভারত, পরীক্ষিত শত্রু পাকিস্তান: শামীম ওসমান
প্রতিবেদক, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, পরীক্ষিত বন্ধু ভারত, পরীক্ষিত শত্রু পাকিস্তান। মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান রয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান ব্যাপারে কোন আপোষ নেই।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরীর নবাব সলিমুল্লাহ সড়কে ‘রুখে দাঁড়াও স্বাধীনতা বিরোধী সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে’ ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত কোরবানীর ঈদে মাংস বিতরণের নামে একটি এনজিও সংস্থা রোহিঙ্গাদের মাঝে অস্ত্র বিতরণ ও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহা নামের এক নারীর রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্যের নিন্দা জানান শামীম ওসমান।
তিনি বলেন, ড. কামাল, মির্জা ফখরুলরা বিদেশিদের সাথে মিটিং করছেন। দেশের বাইরেও বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এটা যখন শুনলাম তখনই এ সভার প্রস্তুতি নিলাম।
শামীম ওসমান বলেন, যদি শেখ হাসিনা ডাকেন ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের বিরুদ্ধে তাহলে আবারো একাত্তরের মতো মাঠে নামতে হবে। এজন্যই মিটিং ডাকা।
তিনি বলেন, দেশের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যদি কোনো রকম ষড়যন্ত্র করে তাহলে আমরা চাইলে নারায়ণগঞ্জকে অবরুদ্ধ করে দিতে পারি। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়ক বন্ধ করে দিতে পারি। সুতরাং আমাদের সঙ্গে খেলবেন না।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে শামীম ওসমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা সিদ্ধিরগঞ্জে একটি গণপিটুনির ঘটনায় ৭৫ জনের নাম উল্লেখ সহ ৪শ’ ৯৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে যারা সবাই আওয়ামী লীগের সাচ্চা কর্মী ও ব্যবসায়ী।
তিনি আরো বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ হলো নারায়ণগঞ্জের গোপালগঞ্জ। পুলিশ সুপার আশ্বাস দিয়েছেন নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করবেন না। তারপরেও অতি উৎসাহী কিছু পুলিশ অফিসার ষড়যন্ত্র করছে। অনেক পুলিশ অফিসার আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে নিউজ করতে কিছু কিছু সাংবাদিককে উৎসাহ দিচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এজন্য প্রশাসনের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান চালানোর আহবান জানান শামীম ওসমান।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ মানেই আগুন নিয়ে খেলা। সুতরাং আগুন নিয়ে খেলবেন না। জিয়া পারে নাই, খালেদা জিয়া পারে নাই, এরশাদ পারে নাই। আপনারা পারবেন না। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ হলে শেখ হাসিনা কাউকে ছাড় দিবেন না বলেছেন। আমি সেই শেখ হাসিনার কর্মী। আমাদের তৃণমূলের কোনো কর্মীর গায়ে হাত দিলে আমিও কাউকে ছাড় দেব না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিজের অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ‘বাবা মায়ের পর যদি কাউকে মানি এবং কারো জন্য জীবন দিতে পারি তাহলে তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৭৫ এর পর আমরা যারা রাজনীতিতে এসেছি সবাই শেখ হাসিনাকে স্বপ্নের মা রাজনৈতিক মা মনে করি।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে দলীয় নেতাদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট খোকন সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন প্রমুখ।
এর আগে শহর ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে স্থানীয় নেতারা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে এসে শামীম ওসমানের সমাবেশে এসে যোগ দেন। সমাবেশকে কেন্দ্র করে সভামঞ্চ সহ আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় জেলা পুলিশ প্রশাসন। পোশাকে ও সাদা পোশাকে সভামঞ্চ ঘিরে রাখে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।