ফতুল্লায় শ্রমিক-পুলিশ সংর্ঘষে আহত ২০

 

ফতুল্লা প্রতিনিধি, প্রেসবাংলা২৪ডটকম: ফতুল্লায় একটি রপ্তানিমূখী গার্মেন্টস কারখানা জাজ এ্যাপারেলস গার্মেন্টের শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, ওভার টাইম ও ঈদ বোনাসের দাবিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করে । সেখানে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সাথে পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এসময় শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর করে। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ অর্ধশত রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বৃহস্পতিবার (৮ আগষ্ট)  বিকেলে সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার ভুঁইগড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আন্দোলনকারী শ্রমিকরা জানান, গত চার মাস ধরে কারখানা মালিক কর্তৃপক্ষ তাদের বেতন দিচ্ছে না। কয়েক ভাগে অল্প বেতন দিলেও বেতনের অধিকাংশ টাকাই বকেয়া রয়েছে। এছাড়া ঈদ বোনাস বাবদ প্রতি শ্রমিককে মাত্র এক হাজার টাকা করে দিচ্ছে। শ্রমিকদের দাবি, বেতন বোনাস পরিশোধ না করেই কারখানা বন্ধ করে দেয়ার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদ জানালে কর্মকর্তারা শ্রমিকদের কয়েকজনকে ডেকে মারধর করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

তবে শ্রমিকদের অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিষ্ঠানটির সহকারি মহা-ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কালাম আজাদ জানান, শুধুমাত্র গত মাসের বেতন ও চার মাসের ওভার টাইম পরিশোধ বকেয়া রয়েছে। ফান্ড দূর্বল থাকায় বেতন অর্ধেক এবং ঈদ বোনাস পুরোপুরি দেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও শ্রমিকরা তা না মেনে অহেতুক আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। এর পেছনে বহিরাগত লোকজনের ইন্ধন রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তবে আজকের মধ্যেই শ্রমিকদের সব বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও ফুতল্লা থানা পুলিশ সহ জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তবে শ্রমিকদের অবরোধের কারনে ঢাকা-লিংক রোডের দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। চরম দুর্ভোগে পড়ে ঈদে ঘরমুখো মানুষ জন। কিন্তু বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা অনুরোধ না রেখে  পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এক পর্যায়ে শ্রমিকদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে প্রায় অর্ধশত রাউন্ড টিয়াল সেল, রাবার বুলেট ও সটগানের গুলি ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় লিংক রোডে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।

শিল্প পুলিশের নারায়ণগঞ্জ (জোন-৪) এর সহকারি পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন খান জানান, ভুল বোঝাবুঝির কারনে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে বিক্ষোভ করেছিল। পরে পুলিশ গিয়ে কারখানা মালিক ও কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে বিষয়টির সমাধান হয়। মালিকপক্ষ আজকের মধ্যেই শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছে এবং সেই প্রক্রিয়া চলছে।

শিল্প পুলিশের (জোন-৪) পুলিশ সুপার মো: জাহিদুল ইসলাম জানান, শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে জেলা পুলিশ ও শিল্প পুলিশ মিলে কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেলসহ ৫২ রাউন্ড রাবার  বুলেট ও সটগানের গুলি ছোড়ে। তবে কোন শ্রমিক আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com